জুলফিকার শাহীন: বাঙালীর স্বভাবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ না থাকলে “চোর গেলে বুদ্ধি বাড়ে” প্রবাদটি এতো জনপ্রিয় হতো না। আমি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের নগন্য মফস্বল সংবাদকর্মী। দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে সংবাদ সংগ্রহে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করে আমাকে মাঝে মধ্যে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে। গতকাল একটি বিষয়ে খোঁজ নিতে বের হয়েছি। হঠাৎ পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করি। পুলিশ একেবারেই রাস্তা লকডাউন করে দিয়েছে। একজন কনস্টেবল আমার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। আমি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাকে কার্ড দেখালে তিনি বলেন “সাংবাদিককে কি করোনা ধরবেনা?” সঙ্গীয় অফিসার আমায় চিনতে পেরে যাওয়ার সুযোগ করে দিলেন। পুলিশের এহেন আচরণে আমি বিন্দুমাত্র বিরক্ত হইনি বরং খুশি হয়েছি। কারণ সংবাদকর্মী নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকলেও একজন দায়িত্বশীল পুলিশকর্মী জীবনের ঝুকি নিয়ে আমাদের সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন তার সেই দায়িত্ববোধ দেখে। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও আমরা সময় বাঁচাতে ট্রেনের হেন্ডেল ধরে ঝুলে থাকি, ছাদে উঠি কিংবা অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই লঞ্চে উঠি। মৃত্যু ঝুকিতে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। এটা আমাদের স্বভাব। কোনো সতর্কতাই তখন আমাদের মাঝে পরিলক্ষিত হয় না। তোমনি করোনা বিস্তার রোধে আমাদের এহেন আচরণ অনেকটা স্বাভাবসুলভে পরিণত হয়েছে। সরকারের দেয়া কোনো সতর্ক বার্তাই আমরা সঠিকভাবে মানছিনা। কিন্তু আমার প্রশ্ন সতর্ক থাকার ক্ষেত্রে আমাদের পদক্ষেপ গুলো কি যথেষ্ট? করোনার সংক্রমন ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত, কলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। অপ্রয়োজনে কাউকে ঘরের বাহির যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। কিন্তু খোলা রাখা হয়েছে কাঁচা বাজার। আমরা জানি বাংলাদেশের কাঁচা বাজার গুলোতে ঘিজঘিজ অবস্থা বিরাজ করে। প্রতিদিন হাজার হাজার লোকসমাগম হয় কাঁচা বাজার গুলোতে। আমাদের ত্রান বিতরণ, মুদি দোকান, ফার্মেসি কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দোকানের সামনে গোল দাগকেটে নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চত করা হয়েছে। কিন্তু কাঁচা বাজার গুলোতে সে পরিবেশ কি আছে? ইচ্ছে থাকলেও সেখানে সম্ভব নয়। একজন কৃষক তার পণ্য বাজারে নিয়ে আসছেন। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি দ্বারা তিনি সহ অন্যান্য ক্রেতারা আক্রান্ত হওয়ার কি ঝুকি নেই? একদিকে যেমন সতর্ক করছি অন্যদিকে ঝুকিতে ঠেলে দিচ্ছি। বিষয়টি আমাদের সচেতনায় সাংঘর্ষিক নয় কি? জানিনা প্রশাসন কেন সে দিকে নজর দিচ্ছেন না। আমি কাঁচা বাজার বন্ধ করার পক্ষে নই। তবে ঘিজঘিজ পরিবেশ থেকে কাঁচাবাজার সরিয়ে কোন খোলা মাঠে নেয়া খুব একটা কঠিন বিষয় নয়। বলা হচ্ছে প্রয়োজনে লবণ ভাত খেয়ে ঘরে থাকার জন্য। আমার মতে কাঁচা বাজারে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে না পারলে তা বন্ধ করে দেওয়া হউক। আমরা প্রয়োজনে কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবজি সংগ্রহ করবো, জেলে পাড়ায় গিয়ে মাছ সংগ্রহ করবো। না হয় লবণ ভাত খেয়ে ঘরে থাকবো। আশা করি প্রশাসন বিষয়টিতে সুদৃষ্টি দেবেন।
পূর্বধলায় রাস্তা লকডাউন, কাঁচা বাজারে ভিড়
More from আইন আদালতMore posts in আইন আদালত »
More from গণমাধ্যমMore posts in গণমাধ্যম »
More from জাতীয়More posts in জাতীয় »
More from প্রচ্ছদMore posts in প্রচ্ছদ »
More from প্রযুক্তিMore posts in প্রযুক্তি »
More from প্রশাসনMore posts in প্রশাসন »
More from ফিচারMore posts in ফিচার »
More from বিশেষ সংবাদMore posts in বিশেষ সংবাদ »
More from মতামতMore posts in মতামত »
More from লাইফস্টাইলMore posts in লাইফস্টাইল »
More from সকল সংবাদMore posts in সকল সংবাদ »
More from সম্পাদকীয়More posts in সম্পাদকীয় »
More from স্বাস্থ্যMore posts in স্বাস্থ্য »
Be First to Comment