আমাদের দেশে এক শ্রেণির নেতা আছেন তারা সব সময় সরকারী দলে থাকতে চান। তাদের আমরা দলছুট সুবিধাবাদী আখ্যা দিয়ে থাকি। কিন্তু তাদের যুক্তি খুবই সাদাসিধে।
“আমরা সরকারী দল করি। সরকার বদল হয় কিন্তু আমরা বদলাই না।” পাঠক এর পরও কি আমাদের বলার কিছু থাকে? সুবিধা পেতে, সুবিধা নিতে তারা সব সময় সিদ্ধহস্ত। তাই এসবের পাঠ নিতে তাদের একটু কদর বেশিই থাকে। বেশ কিছু ব্যবসা বানিজ্য আছে যে গুলো সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে দখলে চলে যায়। তাদের মধ্যে একটি হলো ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসা। পূর্বধলায় ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসা শুরু হয় আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে। যারা এ ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন বা এখনো আছেন তারা সময়ের সাথে তাল মিলাতে পারেননি। হয়ত বা ব্যবসায়ী চিন্তা চেতনায় এখনো তারা অর্বাচীন। পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের সব সময় সরকারী দল করা উচিৎ ছিল। না হয় ব্যবসা গুটিয়ে উচিৎ ছিল ঘরবন্দী হওয়া। গত বছর থেকেই আমরা লক্ষ্য করছি মাসের নির্দিষ্ট একটা সময়ে ৪/৫ দিন কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারও বেশি সময় ধরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। এর আগে অবশ্য এমনটি লক্ষ্য করা যায় নি। আগে চ্যানেল ছিল কম। কিন্তু সব সময় দেখা মিলতো। চ্যানেল বেশী কিন্তু দেখা পাওয়া দুস্কর। কারণ ওরা কেন চালাবে? চালালেও আমরা বসে থাকবো কেন? বিষয়টি নিয়ে একটি প্রচীন কথা মনে পড়ে গেলো। “গরু মরলে চামড়া খালাস করতে মুচির আগমন ঘটতো। মুচি শুকুন উড়তে দেখে বুঝে নিতো গরু মরেছে। কোনো কারণে যদি একাধিক মুচি চলে আসতো তবে যে পরে আসতো সে চাকু নিক্ষেপ করে চামড়ার ভাগিদার হতো।”
করোনা কালে মানুষ ঘরমুখী। দেশের খবরাখবর পেতে একমাত্র মাধ্যম ক্যাবল নেটওয়ার্ক। কোমলমতি শিশুর মাঠে খেলতে যেতে পারছে না। তাদের ঘরবন্দি করতে সামান্য বিনোদনের কি কোন প্রয়োজন নেই? তাছাড়া শিক্ষার্থীদের পাঠ কার্যক্রম চালাতে আনেক চ্যানেল এগিয়ে এসেছে। তা থেকেও শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। একটি উপজেলা সদর পৃথিবীর তথ্য প্রবাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে কয়েক দিন। কিন্তু কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই।
করোনার কারণে অনেক গ্রাহক হয়ত সময়মত বিল পরিশোধ করতে পারছেনা। তাই বলে নেটওয়ার্ক বন্ধ করতে হবে? এ ধরণের হটকারী সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের কোথাও হয় বলে আমাদের জানা নেই। জানিনা আমরা কবে মানুষ হবো? জানিনা আমাদের কবে শুভ বুদ্ধির উদয় হবে?
জুলফিকার আলী শাহীন
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
Be First to Comment