আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে বাঙালি হৃদয়ে আবর্তিত হয় নতুন বছরের নতুন দিনের নবসূচনা।বাঙ্গালির প্রিয় ঐতিহ্যবাহী উৎসব-“পহেলা বৈশাখ-শুভ নববর্ষ”।আজ পহেলা বৈশাখ-১৩৩১ বঙ্গাব্দ।
এই বাংলা সনের প্রবর্তন কবে হয়েছিল, কে তার প্রবর্তক নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক থাকলেও অধিকাংশের মতানুযায়ী মোগল শ্রেষ্ঠ সম্রাট আকবরই হলেন বাংলা সনের প্রধান প্রবর্তক।
কালক্রমে পহেলা বৈশাখ আর নববর্ষ আমাদের সাংস্কৃতিক জীবনধারার সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। বৈশাখের এ ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে জমে উঠে বৈশাখী মেলা ও উৎসব। নতুন উৎসবের আমেজে মুখর হয়ে উঠে পুরো বাংলা।
বাংলা নববর্ষকে আরও আনন্দময় করে তুলতে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো চাকুরীজীবিদের জন্য চালু করা হয় বৈশাখী উৎসব ভাতা। যা বাংলা নববর্ষ পালনে উৎসাহ সৃষ্টি করেছে।
বাংলা নববর্ষের আরেকটি আকর্ষণ হলো “মঙ্গল শোভা যাত্রা”। যা বাংলা নববর্ষ পালনে নতুন এবং সার্বজনীন সংস্কৃতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দেই এই ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ জাতিসংঘের ইউনেস্কো কতৃক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে।
বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করেই এই জনপদে গড়ে উঠেছে হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি এবং কালক্রমে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ড।
ফলে বাঙ্গালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রতি জাতির দায়বদ্ধতা আরো পরিস্কার হওয়া উচিত। কেননা এটি বাঙ্গালি সংস্কৃতির একটি গৌরবোজ্জ্বল দিক। আজকের এই পহেলা বৈশাখ, আধুনিক প্রযুক্তিময় বিশ্বের প্রেক্ষাপটে আমাদের সংস্কৃতিকে আরও উর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে। দেশজ সংস্কৃতি যদি প্রাণ ফিরে পায় তাহলেই প্রকৃত বাংলাদেশকে আমরা ফিরে পাবো।
এই ধারাকে সমুন্নত রাখতে “পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসনের”–একটি বিস্ময়কর আয়োজন এলাকাবাসীকে করেছে মুগ্ধ। নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করেছে তার অতীত ঐতিহ্যের প্রতি। মঙ্গল শোভাযাত্রা দিয়ে দিবসটির সুচনা হলেও পুরো দিনজুড়ে নানান রংবেরঙের পোষ্টার প্রদর্শন,বাশির বাজনা,উপস্হিত সকলের মাঝে পান্হা ইলিশ সরবরাহ,নানান রকমের নাচে গানের মিশ্রনে দেশীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,কাবাডি খেলা, রশি টানাটানি, পাতিল ভাঙ্গা ও গুড়ি উড়ানো ছিলো আজকের পূর্বধলার দৃশ্যমান ঐতিহ্যের বৈচিত্র্যময় আয়োজন। আয়োজনের প্রত্যেকটি বিষয় প্রচীন বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে পুরো বাঙ্গালী জাতীকে তার অতীত ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তুলবে- -এটি আমাদের প্রত্যাশা।
অধ্যাপক মোঃ এমদাদুল হক বাবুল, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, পূর্বধলা উপজেলা।
Be First to Comment