নেত্রকোনা পূর্বধলার বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক মেহেদী হাসান গোলাপ (২৮) হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি সাইফুল ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহকে (২৩) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪। গ্রেফতারকৃত আসামি পূর্বধলার কালডোয়ার গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সাইফুল হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বেচ্ছায় স্বীকার করেছেন। তাকে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শনিবার (১৫ জুন) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে র্যাব-১৪ ও র্যাব-১ এর যৌথ অভিযানে তাকে ঢাকা উত্তরার ৪নং সেক্টরের পাঁচ নাম্বার রোডস্থ আজোয়া রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
র্যাব-১৪ এর সদর ব্যাটালিয়নের অপারেশনস্ অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুলফিকার আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম ও সহকারি পুলিশ সুপার মুহা. জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করেন।
ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল চালক মেহেদী হাসান গোলাপ পূর্বধলার সোহাগীডহর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালামের (৭৪) ছেলে। তিনি (মেহেদী) ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১৪ এর অপারেশনস অফিসার ও অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম।
র্যাব জানায়, ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে পূর্বধলার হোগলা ব্রীজ সংলগ্ন স্থান থেকে ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল চালক ভাড়ায় দুজন অজ্ঞাতনাম ব্যক্তিকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানাধীন কামারগাঁও ইউনিয়নের শালিয়াকান্দা গ্রামের দিকে রওনা দেন। রাত অনুমান সাড়ে ৯টার দিকে তারাকান্দা থানাধীন চিকলি বিলের ব্রীজের উপর পৌঁছালে আরোহীদ্বয় প্রস্রাবের কথা বলে মোটারসাইকেল থামাতে বলেন। থামানোর সাথে সাথে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ছোরা ও ডেগার বাহির করে ভুক্তভোগীকে খুন-জখমের হুমকি প্রদান করেন।
একপার্যায়ে অজ্ঞাতনামাদের একজন ভুক্তভোগীর পেটে ঘাই মেরে ভুড়ি বের করে ফেলেন ও লাথি মেরে ব্রীজের নিচে ফেলে গলা কাটার চেষ্টা করেন। এসময় ভুক্তভোগী গোলাপের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসতে থাকলে অজ্ঞাত ব্যক্তিদ্বয় মোটরসাইকেলটি পানিতে ফেলে দেন। ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান অজ্ঞাত ব্যক্তিদ্বয়।
র্যার আরও জানায়, স্থানীয়রা গোলাপকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার তিন দিনপর ২৩ জানুযারি রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে মেহেদী হাসান গোলাপ মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। একজন সন্দিগ্ধ আসামীকে গ্রেফতার এবং অপর সন্দিগ্ধ আসামি সাইফুল ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন এই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
Be First to Comment