নেত্রকোনার পূর্বধলা সদর ইউনিয়নের তারাকান্দা গ্রামে শিয়ালের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। বেড়েছে শিয়ালের আক্রমণ। গত এক দিনে উপজেলার সদর ইউনিয়নের তারাকান্দা গ্রামে শিয়ালের কামড়ে অন্তত ৬ নারী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অনেকে শিয়ালের আক্রমন শিকার হয়েছে। এতে শিয়াল আতঙ্কে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
সরেজমিনে বুধবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় সদর ইউনিয়নের তারাকান্দা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামবাসীর মধ্যে শিয়াল আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিয়ালের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গ্রামবাসী লাঠি হাতে চলাচল করছেন। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ঘর থেকে কেউ ভয়ে বের হচ্ছে না।
শিয়ালের কামড়ে আহতরা হলেন- নাজনীন আক্তার (২৫) , তারা খাতুন (৬৫) , শেফালী আক্তার (৪০) , মোছা: পলি আক্তার (২০) , মনি রানী দাস (১৩) , খাদিজা (৩০) । আহতদের নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাঠে ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ শিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়েছেন নাজনীন আক্তার ও পলি আক্তার । সেদিন রাতে কামড়িয়েছে তারা বেগম, শেফালী আক্তার, মনি রানী দাস, হামিদা খাতুনকে। এছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লাইন টিক করতে যাওয়া একজনকে কামড় দেয়।
নাজনীন আক্তার বলেন, আমি সন্ধ্যায় বারান্দায় বাচ্ছাকে নিয়ে সিড়ির কাছে দাড়িয়ে ছিলাম হঠাৎ পিছন থেকে একটি শিয়াল এসে কামড়াতে থাকে। আমার ৮ মাস বয়সী দুধ পান করে ছেলে আছে। এখন বাচ্ছাকে দুধ খাওয়াতে পারছি না।
স্থানীয়দের সাথে কথা জানা যায়, তারাকান্দা গ্রামে দিনের বেলায় শিয়ালের আনাগোনা দেখা যায়, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর শেয়ালের আতঙ্কে থাকে সবাই। বর্তমানে শিয়ালের উপদ্রব বাড়াই গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
দক্ষিনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাজার থেকে ফেরার পথে রাস্তায় শিয়ালে আমাকে আক্রমন করে আমার হাতে থাকা বাজারের ব্যাগ ৩ বার কামঁড় দেয়, ব্যাগের কারনে কামড় থেকে বেঁচে গেছি। কাকলী আক্তার নামে এক শিক্ষার্থীর কাপড়ে আচঁড় দেয়।
স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: আজিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমার ওয়ার্ডে ১ দিনে ৬ জনকে শিয়ালে কামড়িয়েছে। আহতদের নেত্রকোণা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। সবাই ভ্যাকসিন গ্রহন করেছে। তিনি আরও জানান, এলাকায় সন্ধ্যর পর থেকেই শিয়ালের উপদ্রব দেখা যায়। এমনকি দিনের বেলায় ও ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়। শিয়ালের বাসস্থান না থাকা বন জঙ্গল কেটে ফেলার কারনে এবং পর্যাপ্ত না খাবারের অভাবে হয়তো জনবসতিতে শিয়ালের আনাগোনা বেড়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এম. এম. এ আউয়াল তালুকদার বলেন, শিয়াল সাধারণত ২ কারণে মানুষকে আক্রমণ করে। যদি পর্যাপ্ত খাবার সে না পায় বা আক্রমণের শিকার হলে এবং র্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত হলে। পাগলা শিয়াল যদি কাউকে কামডায় তাহলে ডাক্তারের কাছে গিয়ে জলাতঙ্ক টিকা নিতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড: মাহমুদুল হাসান বলেন, শিয়ালে কামড়ানোর পর আমরা তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকি। বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে শিয়ালে কামড়ানোর কোনো ভ্যাকসিন নেই।
Be First to Comment