আবারো শ্যামগঞ্জ বাজারে আগুন, পুড়ে গেছে দুইটি দোকান। এক বছর পার হতে না হতেই পূনরায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে হলি চাইল্ড একাডেমির সামনে শ্যামগঞ্জ বাজারে। ক্ষতির পরিমাণ ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা। ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা এর মধ্যবর্তী এলাকা পূ্র্বধলা উপজেলার অংশের শ্যামগঞ্জ বাজারের (১৭ জানুয়ারি) বুধবার বেলা পৌনে ১২ ঘটিকায় জালশুকা কুমুদগঞ্জ বাজারের একটি লেপ-তোষকের দোকান থেকে বিদ্যুতের শর্টসার্কিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে জানা যায়। মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের ১টি সার কীটনাশক দোকানে।
আগুন লাগার ২০ মিনিট পর পূর্বধলা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে পুড়ে যাওয়া লেপ-তোষকের দোকান মালিক আব্দুল্লাহ বলেন, আমার এইখানে লেপ-তোষকের দোকানসহ তুলার গোডাউন ছিল, সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার ক্ষতির পরিমাণ ৭ লক্ষ টাকা। হুমায়ূন এন্টারপ্রাইজ এর মালিক এবাদুল হক বলেন, আমার সার ও কীটনাশক দোকানে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার সার ও কীটনাশক আগুনে পুড়ে বশীভূত হয়ে গেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পানি ব্যবহারের কারণে অনেক সার কীটনাশক নষ্ট হয়ে গেছে।
আগুন লাগার খবর শুনে তাৎক্ষণিক পরিদর্শনে আসেন পূ্র্বধলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খবিরুল আহসান। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের প্রধানদের সাথে কথা বলেন এবং আগুন লাগার সূত্র, ক্ষতির পরিমাণের বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
শ্যামগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী তিলক রায় টুলু জানান, এই বাজারটি পূর্বধলা এবং গৌরীপুর এই দুই উপজেলার মাঝখানে ঘনবসতি একটি বাণিজ্যিক বাজার। কয়েক মাস আগেও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এই বাজারে প্রায় ১০০টি দোকান পুড়ে যায়। আগুন নির্বাপনের জন্য পানির সুব্যবস্থা জরুরী উল্লেখ করে তিলক রায় জানান, পানির পাম্প বসালে অনেকটা সহজেই জরুরী ভিত্তিতে এই সমস্যার সমাধান হবে। তবে আশার বাণী হচ্ছে শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশে বয়ে যাওয়া সোয়াই নদীর খনন কাজ চলমান।
পূর্বধলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, বেলা পৌনে বারোটায় শ্যামগঞ্জ বাজারে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার আগে ১টি তুলার দোকান আগুনে পুড়ে যায় এবং সার ও কীটনাশকের দোকানে আগুন লেগে অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতবছর (২৩ মার্চ) শ্যামগঞ্জ বাজারে আগুন লাগে, এতে পুড়ে যায় ১শতর ছেয়েও বেশি দোকান এবং বেশ কয়েকটি বসত বাড়ি। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় রাত দেড়টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে প্রায় একশ কোটি টাকার উপরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেন। এর আগে ২০১৯ সালে (১০ ফেব্রুয়ারি) শ্যামগঞ্জ মাছ বাজারে গভীর রাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৮টি দোকান ভস্মীভূত হয়েছে। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেছেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ ঘটিকায় গরুহাটা মাংস মহলের একটি ইলেকট্রনিক দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আরো ৫ থেকে ৬টি দোকানে পুড়ে যায়। শ্যামগঞ্জ বাজারটি একই সঙ্গে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার তিনটি উপজেলার মধ্যে পড়েছে।
Be First to Comment