বড় ভাইয়ের স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে সদ্য ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে আরিফুজ্জামান (১৯) । স্বপ্ন পূরণ হলো কিন্তু আজ বড় ভাই আর দুনিয়াতে নেই। ৮ মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান বড় ভাই ফরিদুজ্জামান। লেখাপড়া করতেন দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছোট ভাইকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন ছিল মৃত বড় ভাইয়ের। ৮ মাস পর আবারো ভাইয়ের শূন্যতা অনুভব করে ব্যতিত আরিফুজ্জামান। সবকিছু পেয়েও কি যেন নেই। মেডিক্যালে চান্স পাওয়ার আনন্দটা পরিপূর্ণ হতো বড় ভাই পাশে থাকলে।
নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের উকুয়াকান্দা গ্রামের আব্দুস ছাত্তার ও ফরিদা ইয়াছমিন দম্পতির ছেলে আরিফুজ্জামান । পূর্বধলা জগৎমনি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও পূর্বধলা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৫.০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ৷ তার এমন সফলতায় খুশি তার পরিবার ও স্থানীয়রা।
আবেগাপ্লুত হয়ে মা ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, আজকে আমি অনেক আনন্দিত। আজকের এই দিনে আমার বড় ছেলের কথা খুবই মনে পড়তাছে। সে বলেছিল, “ভাই আমি তোরে ডাক্তার বানাবো”। সে থাকলে অনেক খুশি হইতো।
পিতা আব্দুস সাত্তার বলেন, বড় ছেলের স্বপ্ন পূরণ করেছে আমার ছোট ছেলে। এই আনন্দের দিনে বড় ছেলের কথা মনে পড়ছে। ছোট ছেলে মেডিক্যালে চান্স পাওয়ায় আমরা অনেক খুশি। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন যেন দেশের সেবা করতে পারে।
মেডিকেল চান্সপ্রাপ্ত আরিফুজ্জামান বলেন, আমি মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। মেডিকেলে পড়ালেখার স্বপ্নের বীজ রোপণ করেছিল আমার বড় ভাই। ভাইকে হারানোর পর আমি অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছিলাম। সে সময় বাবা-মা, শিক্ষকগণ সহ প্রতিবেশীরা আমাকে মনোবল জুগিয়েছেন। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই ও দেশের সেবায় যেন নিয়োজিত থাকতে পারি সেজন্য দোয়া চাই।
ইউপি চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, তার বাবা ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। কিছুদিন পূর্বে উনার বড় সন্তান এক্সিডেন্টে মারা যান। সে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পড়তো। সম্প্রতি ছোট ছেলে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে, এতে ইউনিয়নবাসী আনন্দিত। তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
Be First to Comment