এখন করোনাকাল। ১৭ মার্চ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে লাগাতার ছুটি। যাদের পদচারনায় প্রতিদিন মুখর হতো প্রিয় ক্যাম্পাস তাদের অনুপস্থিতিতে সেখানে আজ শুনসান নিরবতা।
আগামীর উন্নত বাংলাদেশ তৈরির ভবিষ্যৎ কুশিলব যারা আজকের শিক্ষার্থীর তাদের শুন্যতায় ক্লাস রুম আজ তালাবদ্ধ। ক্লাস রুমে বসে স্যারের দৃষ্টিকে ফাঁকি দিয়ে একে আপরের সঙ্গে হতো খুনশুটি। কখনও কখনও আবার একে আপরের বিরুদ্ধে নালিশ টুকে দিতো। তারা-ই বইয়ের পাতা নিংড়ে মগজে ধারণের অবিরাম চেষ্টায় মগ্ন থাকতো। চলতো নতুনকে জানার ও শেখার নিরন্তর চেষ্টা। ব্যর্থ হলে স্যার সব পারবেন সেই বদ্ধমূল ধারণা থেকে শ্রেণি শিক্ষকের দ্বারস্থ হওয়া। একটু ফুরসত পেলেই শৈশবের স্বভাবজাত দূরন্তপনায় মেতে ওঠা। খেলাধুলা, হৈচৈ, ছুটা
ছুটিতে প্রাণোচ্ছল হতো সারাটা দিন। ক্লাসের বিরতিতে মাঠ জুড়ে মেতে উঠতো নানান খেলাধুলায়। চলতো প্রাণবন্ত আড্ড।
কিন্তু কি নিদারুণ কাল চলছে। সব-ই এখন স্থবির। ক্যাম্পাসের প্রতিটি আঙ্গিনা তোমাদের শুন্যতায় খাঁ খাঁ করছে। বলছে আবার কবে তোমাদের কোলাকলে প্রাণ চঞ্চল হবে এই আঙ্গিনা? নিশ্চয়-ই তোমরাও দারুণ মিস করছি প্রিয় ক্যাম্পাস, প্রিয় সতির্থদের। দীর্ঘ সময় স্কুল ও বন্ধুদের থেকে দূরে থাকার কাতরতা তোমাদেরও পীড়িত করছে।
এই কালে জীবনযাত্রা বদলেছে অনেকখানি। তবু প্রকৃতি কিন্তু থেমে নেই। ঋতু চক্রের নিয়মে একের পর এক তা বদলাচ্ছে। আমরা মানুষকূলও আশা নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি। স্বপ্ন দেখছি নিষ্প্রভ কাল হয়ত সহসাই শেষ হবে। আবারও প্রাণ ফিরে পাবে সবকিছু। স্বরুপে ফিরে আসবে জীবন, জীবিকা ও কর্মতৎপরতা। প্রিয় ক্যম্পাস আবার মুখর হবে তোমাদের প্রাণোচ্ছল উপস্থিতিতে। শুরু হবে জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে যোগ্য হয়ে উঠার প্রাণান্তকর চেষ্টা।
পরিশেষে বলি, ঘরে থাক, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চল। যতদিন না স্কুল খোলা হচ্ছে, ততদিন বাড়িতে বসেই পাঠ্যসূচি অনুযায়ী পড়ালেখা চালিয়ে যাবে। সম্মানিত অভিভাবকদের অনুরোধ, আপনার সন্তানকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে খেয়াল রাখবেন।
মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা
শিক্ষক ও সাংবাদিক, পূর্বধলা, নেত্রকোণা।
Be First to Comment