Press "Enter" to skip to content

ইতিহাসের এক নির্লজ্জ বেহায়াপনা-মোঃ এমদাদুল হক বাবুল

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশীয় কিছু লোকদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল”আল-বদর” নামে একটি আধা সামরিক বাহিনী। যেখানে কিছু লোক ট্রেনিং নিয়েও অবশেষে ভারতে পারি জমিয়ে আত্মশুদ্ধিও করেছিল। এরা মুলত পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা এবং তৎকালীন পাকিস্তান রাষ্ট্রকে অক্ষুণ্ণ রাখার পক্ষে জনমত গড়ে তোলার কাজে নিয়োজিত ছিল। এই বাহিনীর লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক হত্যার মাধ্যমে নিরীহ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। পাকিস্তান বিরোধী বুদ্ধিজীবীদের নিশ্চিহ্ন করাও ছিল তাদের অন্যতম কাজ। এরাই ঢাকার রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে এদেশের  বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল।কারন তারা জানে,কোন দেশের বৈপ্লবিক চেতনাকে নস্যাৎ করতে হলে প্রথমেই তার মেধাশক্তিকে দুর্বল করে দিতে হয়।এখনো এদের মধ্যে বেচে থাকা”আল-বদররা”  নিজদের অস্তিত্ব ও আধিপত্য বিস্তারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহনকারী মেধাশক্তির বিনাশ ঘটাতে চায়।এরা ধর্ম, সমাজ, এবং রাষ্ট্রের মাঝে  বিভক্তি সৃষ্টি করে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে বিতর্কিত করতে চায়। ২৬মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা থেকে ১৭এপ্রিল মুজিব নগর সরকার গঠনের পুর্ব পর্যন্ত  প্রতিরোধ যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পুর্ববঙ্গের সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালী- হানাদার বাহিনীর আক্রমণকে প্রতিহত করেছিল। ১৭এপ্রিল মুজিব নগর সরকার গঠনের পরই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ।বঙ্গবন্ধুর তেজদ্বীপ্ত কন্ঠের নির্দেশনায়-“নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাঙ্গালীর কাংখিত স্বাধীনতা”। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনঃগর্ঠনে বঙ্গবন্ধুর অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশ যখন সমৃদ্ধির পথে, ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডটি পুরো বাঙ্গালী জাতিকে হাতাশায় নিমজ্জিত করে।একটি অনাদর্শিক রাজনীতির অন্ধকারে পুরো বাংলাদেশ নিমজ্জিত হলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শগুলো হৃদয়ে ধারন করে যারা নিরবে নিভৃতে কাজ করেছে তাদের প্রতি বাংলাদেশ চিরকৃতজ্ঞ।আর চলার পথে যারা বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের বাইরে যেয়ে বাংলাদেশী হিসাবে- হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অথবা সমর্থিত শাসকদের সহায়ক হয়ে নিজেকে ঐতিহ্যের ধারক-বাহক বানাতে চান সেটি একধরণের নির্বোধের সামিল। কারন মানব জাতি সৃষ্টির ইতিহাসের সমান্তরালে প্রতিটি মানুষেরও একটি নিজস্ব ইতিহাস থাকে –যা সর্ব সময়েই মানুষটাকে তার জীবনাদর্শটুকু স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রত্যেকের মনে রাখা উচিত-“স্বাধীনতা, সমতা,আর ভ্রাতৃত্ববোধের” মহান শ্লোগান গুলোকে সামনে রেখে  পৃথিবী গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে গেলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান ছিল “জয় বাংলা”।এটি কিন্ত আজ কোন ব্যক্তি বা দলের শ্লোগান নয়- এটি মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান, আর সেটিই এখন বাংলাদেশের জাতীয় শ্লোগান। সুতরাং প্রত্যেককেই জাতীয় বিষয়গুলো অনুধাবন করে চলা উচিত।অন্যথায় অবনমন এবং বৈপরীত্য অনিবার্য।

মোঃ এমদাদুল হক বাবুল, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, পুর্বধলা উপজেলা শাখা।

More from আইন আদালতMore posts in আইন আদালত »
More from রাজনীতিMore posts in রাজনীতি »
More from রাজনীতিMore posts in রাজনীতি »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.