করোনার প্রভাবে এখন সর্বত্রই সামাজিক, অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনগণের পাশে থেকে দূর্যোগ মোকাবেলায় একের পর এক জনবান্ধব কর্মসূচী দিয়ে যাচ্ছেন। এতে চেষ্টার কমতি নেই । কিন্তু এসব কর্মসূচী বাস্তবায়ণে যারা সম্মুখ সারিতে থেকে কাজ করবেন সেই জনদরদী জনপ্রতিনিধিরা কোথায় আছেন কি করছেন? জনগণের পাশে থেকে সরকারে জনবান্ধব কমর্সূচী বাস্তবায়ণে তাদের কি কোনো দায়বদ্ধতা নেই?
” লকডাউনের কারণে জনগণের সুবিধার্থে সরকার মার্চ মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত বিলম্ব মাশুল ছাড়া বিদ্যুৎ বিল গ্রহনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।” কিন্ত এর পরিণতি কি দাড়ালো? বৃটিশ উপনিবেশিক ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানি রূপে অবতীর্ণ হলো পল্লী বিদ্যুৎ। আমাদের জমির উপর দিয়ে লাইন নিবে, আমাদের টাকায় কেনা মিটারের ভাড়া তাদের দিতে হয়। ডিমান্ড চার্জ সহ বাহারি চার্জ তো আছেই। গড় বিলের নামে মনগড়া মিটার রিডিং বাড়িয়ে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করলো। এ যেনো মঘের মুল্লুক! কিন্তু আমাদের জনদরদী জনপ্রতিনিধিরা টু শব্দটিও করলেন না।
” মরবি তো মর, তবে মালির ঘাড়ে কেন”
ঠিকই তো। তাঁরা তো উচ্চ বংশী সামন্ত জমিদার। প্রজা প্রতিপালনের চাবুক তো এখন তাদের হাতে। সোহাগ কেন! শাসন করবেন। পাঁচ বছর পর পর আসবেন, হ্যামিলনের বাঁশি নিয়ে। সুরের মুর্ছনায় আমরা মুগ্ধ হবো। এক কাতারে দাড়াবো। আর নদীতে ঝাপ দেবো। কারণ বাঙালী আত্মবিস্মৃত জাতি। আমরা সহজেই সবকিছু ভুলে যাই এই সূত্র তাদের জানা।
পল্লী বিদ্যুৎ চেয়ারম্যান গ্রহকদের চেচামেচির( তাদের কাছে প্রতিবাদকে চেচামেচি মনে হয়) কারণে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে একটি আশা-নিরাশার বাণী শুনিয়েছেন। যা হুবহু তোলে ধরা হলো-
” সম্মনীত গ্রাহক, করোনার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনা করে ঘরে ঘরে গিয়ে মার্চ ও এপ্রিল মাসের প্রকৃত রিডিং গ্রহণ করা সম্ভব না হওয়ায় গড় বিল করার নির্দেশ ছিল। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বিল করার অভিযোগ রয়েছে যা আমলে নিয়ে ৩০ জুনের মধ্যে সমন্বয়ের নির্দেশ দিয়েছি এবং এব্যাপারে তদন্ত চলছে। দোষীদের শাস্তি দেব। এজন্য আমি দুঃখিত। ” – চেয়ারম্যান, পল্লী বিদ্যুত সমিতি। এ যেনো, ” ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না।” গড় বিলে ইউনিট বেড়ে যাওয়ার করণ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে যে অতিরিক্ত টাকা নিলেন তা কোথায় সমম্বয় করবেন? অনেকটা “গরু মেরে জুতা দান”। “টাকা যা হারাইছি হারাইছি এখন গামছা দেন বাড়ি ফিরি।” আমরা জনগণের অবস্থা তো তাই।
আজ কোথায় জনপ্রতিনিধিরা, জনগণের পাশে দাড়িয়ে দু’চারটা কথা বলেবেন? আপনাদের সামান্য সুদৃষ্টি অনেক সমস্যা সমাধানের পথ প্রশস্ত হয়। কিন্তু জনগণের প্রতি কি আপনাদের কোনো দায় নেই?
জুলফিকার আলী শাহীন
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
Be First to Comment