নেত্রকোণার পূর্বধলায় যথাযথ মর্যাদায় ব্যাপক কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পূর্বধলা হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল পুস্পস্তবক অর্পণ, বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালী ও আলোচনা সভা। এ উপলক্ষে পূর্বধলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আয়োজনে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে পূর্বধলা মুক্তিযোদ্ধা স্তম্ভে উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে একটি বিজয় র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে গিয়ে শেষ হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খবিরুল আহসান সভাপতিত্বে এবং শহিদুল ইসলাম আঙ্গুরের সঞ্চালনায়
সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজনীন আক্তার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ রাজু আহমেদ রাজ্জাক সরকার, পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদুল ইসলাম, পূর্বধলা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জনাব,মো:মাসুদ হাওলাদার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আইয়োব আলী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রব তালুকদার হোগলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসলাম উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক এমদাদুল হক বাবুল, পূর্বধলা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিদ্দিকুর রহমান বুলবুল, আগিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন চৌধুরী, গোহালাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মাসউদোর রহমান পূর্বধলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মোঃ আফাজ জাহাঙ্গীর রাসু, সাধারণ সম্পাদক হাসান আব্দুল্লাহ আল তারেক বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানগন প্রমুখ।
উলেখ্য, ১৯৭১ সালের এই দিনে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনতার যৌথ আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনী ৮ ডিসেম্বর রাতে পূর্বধলা থেকে পালিয়ে যায়। পর দিন ৯ ডিসেম্বর সকালে আবারও হানাদার বাহিনী জারিয়া-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেনযোগে গৌরীপুর থেকে পূর্বধলায় প্রবেশ করতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণ ও প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। এসময় পাক সৈন্যরা পূর্বধলা উপজেলার পাবই রেল সেতুটি মাইন বিস্ফোরণে ধ্বংস করে যায়। ওই দিন নেত্রকোনার বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া পাক সৈন্যরা পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পথে উপজেলার শ্যামগঞ্জ পশ্চিম বাজারের মুক্তিযোদ্ধা সুধীর বড়ুয়াকে হত্যা করে। পূর্বধলার ওই যুদ্ধই একাত্তরের রণাঙ্গনে নেত্রকোনা জেলার শেষ যুদ্ধ। আলোচনা শেষে নিহত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে আলোচনা সভা শেষ হয়।
Be First to Comment