নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। বর্তমানে নারায়ণডহর পূর্বধলা উপজেলার একটি অন্যতম জমজমাট বাজার হিসেবে ব্যবহৃত হলেও প্রাচীন জমিদার বাড়ীর জন্য এর খ্যতি ছিলো সর্বজন বিধিত।
নারায়ণডহর নামকরণের বিশেষত্ব খুঁজে পাওয়া যায় তৎকালীন হিন্দু জমিদারদের শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত ‘নারায়ণ মন্দির’-এর নাম থেকে। নারায়ণ মন্দির থেকে নারায়ণ এবং এর সাথে ডহর যুক্ত করে নাম রাখা হয়েছে নারায়ণ ডহর। ‘ডহর’ বা ‘ডোবা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ গভীর জলাশয়, জলাভূমি, খাল, গভীর গর্ত। এই স্থানে অবস্থিত নারায়ণডহর বাজারে দলাই নদীর তীরে একটি ডোবার (গভীর জলাশয়) রয়েছে। এই ডহর শব্দের পূর্বে নারায়ণ যুক্ত হয়ে নারায়ণডহর নামের উৎপত্তি হয়েছে। এ কারণেই উক্ত অঞ্চলের আশেপাশের অনেক স্থানেও ডহর নামের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়; যেমন- ডোপাডহর, বামনডহর, সোহাগীডহর, পূর্বডহর ইত্যাদি।
ইতিহাস থেকে জানা যায় নারায়ণডহর জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রামচরণ মজুমদার। জমিদার রামচরণ মজুমদারের হাত ধরেই এই জমিদার বংশের গোড়াপত্তন। তবে কবে নাগাদ এই জমিদার বংশ বা জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে এই নারায়ণডহর এলাকা গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা হিসেবে পাকিস্তান শাসনামল পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল।
জমিদার বাড়ির পাশে একটি বাজার রয়েছে। যা এই জমিদার বংশধররা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও তৎকালীন সময়ে পুরো ময়মনসিংহ বিভাগের প্রথম ইংরেজি স্কুল ১৮৪৬ সালে এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়।
অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আজো ঠিকে আছে কালানুক্রমে এই রাজবাড়ি। বর্তমানে জমিদার বাড়ির প্রতিটি স্থাপনা প্রায় ধ্বংসের মুখে। এছাড়াও প্রতিটি স্থাপনায় লতাপাতায় ও গাছগাছালিতে জরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে।
তবে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে বাড়িটিকে চিহ্নিত করে স্থাপনাসমূহ সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
Be First to Comment