নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম সোয়াই নদী খননের উদ্যোগ নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এ সময় ভূমিদস্যুদের হাত থেকে নদীকে পুনরুদ্ধার, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, শিশু পার্ক স্থাপন করতে গণস্বাক্ষর ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাবি শিক্ষার্থী মারিয়াম জামান খান সোহান। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শ্যামগঞ্জ হাফেজ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ গেইটে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে মাঠ দখলমুক্ত করা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, শহীদ সুধীর বড়ুয়া স্মৃতিসৌধ আধুনিকায়ন, পুকুরটি পুনখনন, মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা চালু করার দাবিতে ২৩ মার্চ অপর একটি মানববন্ধন করেন সোহান।
শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনটি আধুনিকায়ন করা হলেও যাত্রীদের জন্য পাবলিক টয়লেটটি বন্ধ ছিল। ফলে যাত্রীদের সমস্যা ছিল নিত্যদিনের। এজন্য গত ২৫ মার্চ রেলস্টেশন এলাকায় পাবলিক টয়লেট খুলে দেওয়ার প্রচারণা চালান সোহান। সোহানের বাড়ি শ্যামগঞ্জ এলাকায়।
নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম বানিজ্য কেন্দ্র শ্যামগঞ্জ বাজার। ব্যবসা ছাড়াও ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানটি। শ্যামগঞ্জ বাজারটি ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নদী সোয়াই নদীর পাশে অবস্থিত। প্রাচীন কালে এই নদীতে সওদাগরের নৌকা থাকতো। এমনকি বছর তিরিশ আগেও আশেপাশের গ্রামের মানুষেরা নৌকা দিয়ে মালামাল আনানেওয়া করতো। কিন্তু নদীতে পলি মাটি জমে নদীর স্রোত কমার সাথে সাথে স্থানীয়রা নদীটি ভরাট করে দখল নেওয়ার উৎসবে শামীল হয়েছে। যে যেভাবে পারছে নদী দখল করেছে এবং স্থায়ীস্থাপনা নির্মাণ করেছে। এখন নদীটির কোথাও কোথাও অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে।
করোনার সময়ে শ্যামগঞ্জ বাজারে সর্ব বৃহৎ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি সংগ্রহ করতে পারেনি। যার ফলে বাসাবাড়িসহ দোকান পাটের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি।
স্থানীয় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো এই নদী খননের উদ্যোগ নিয়েছে এবং সোয়াই নদী খনন কাজ এখন চলমান। কিন্তু শ্যামগঞ্জ বাজারে আশেপাশে নদীর অস্থিত্ব বিলীন। নদীর নির্ধারিত জায়গা বেদখল হয়ে পড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মারিয়াম জামান খান সোহান বলেন, “সোয়াই নদীর তীরে ভূমিদস্যুদের কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। মেইন রোডের পাশে সোয়াই নদীর তীরে ভূমিদস্যুদের যত অবৈধ স্থাপনা রয়েছে তা সড়িয়ে ফেলতে হবে এবং সোয়াই নদীর তীর ঘেষে তরঙ্গ হলের গেইট থেকে মেইন রোডের দক্ষিণ পাশ হয়ে অবৈধ দখল দারিত্ব উচ্ছেদ করে মাঝিপাড়া পর্যন্ত দৃষ্টি নন্দন ওয়াক ওয়ে এবং শিশুদের জন্য একটা পার্ক নির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি। ঐতিহাসিক শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে মাঠ দখলমুক্ত করে অল্পসময়ের মধ্যে মাঠটি দখলমুক্ত করে খেলাধুলার উপযোগী করে তুলার আহবান জানান। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে পাবলিক টয়লেট চালু করে। তরুণরা স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় যথাস্থানে ময়লা ফেলার জন্য ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিতরন করেন। তিনি আরো বলেন, এই কাজ গুলো সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আর এই আন্দোলনে এলাকার সর্ব স্থরের মানুষের সহযোগিতা চান।”
তার এই কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে মেহেদী হাসান রানা বলেন, “সোহানের উদ্যোগ খুব চমৎকার, পরিবেশ বান্ধব, তার দাবি দাওয়া পূরণ হলে শ্যামগঞ্জ এলাকাটি দৃষ্টিনন্দন হবে।”
Be First to Comment