গত ১০ মার্চ নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার খলিশাউড় ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামের জনৈক আবুল কাশেম এর ঘরের বারান্দার আড়ার সঙ্গে সোনিয়া আক্তার সুইটির (১৮) নামের এক যুবতীর অর্ধ ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উক্ত ঘটনায় নিহত সুইটির পিতা আব্দুস সোবান বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে ঘটনার ৫ দিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে মূল আসামীকে গ্রেফতার করেছে পূ্র্বধলা থানা পুলিশ।
আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুরে পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
১০ মার্চ রোববার অর্ধ ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম নেত্রকোনা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় এই হত্যা মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকারী মোঃ এনামুল হককে শনাক্ত করে এবং তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ এনামুল হক নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার খলিশাউড় ইউনিয়নের খলিশাপুর ( বনপাড়া মালবাড়ী) গ্রামের মৃত মঞ্জুল হকের ছেলে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এনামুল হকের সাথে সোনিয়া আক্তার সুইটির পূর্বে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকা অবস্থায় সোনিয়া আক্তার সুইটি ইরাক প্রবাসী জনৈক শরিফুল এর সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয় এবং পারিবারিকভাবে বিবাহের কথাবার্তা হয়। ইরাক প্রবাসী শরিফুল হকের সাথে সোনিয়ার আক্তার সুইটির বিবাহের কথাবার্তা চূড়ান্ত হওয়ায় আসামী মোঃ এনামুল হক তা মেনে নিতে না পেরে সোনিয়া আক্তার সুইটির প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে সুযোগ খুঁজতে থাকে। অতঃপর ১০ মার্চ রাত অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার পর আসামী এনামুল হক সোনিয়া আক্তার সুইটিকে বাড়ী থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী রাজিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের দক্ষিণ পূর্ব কোণে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকার আলাপ আলোচনা করে। আলাপ আলোচনার একপর্যায়ে আসামী মোঃ এনামুল হক সোনিয়া আক্তার সুইটির গায়ে থাকা ওড়না গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ নিহতের নানা মোঃ আবুল কাশেম এর পূর্ব দুয়ারী টিনের বসত ঘরের সামনের খোলা বারান্দার বাঁশের ধরনার সাথে ওড়না দ্বারা ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, নিহত সোনিয়া আক্তার সুইটি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা গ্রামের আব্দুস সোবানের মেয়ে অনুমান ১ বছর যাবত বৃদ্ধ নানা-নানীর সেবা যত্ন করার জন্য নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার খলিশাউড় ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামে তার নানার বাড়িতে বসবাস করত।
Be First to Comment