কোটা সংস্কার কোনদিকে -এমদাদুল হক বাবুল

বাংলাদেশ একটি রক্তাক্ত ইতিহাস।। সেই রক্তাক্ত ইতিহাসে রক্তের দাগ শুকাতে না শুকাতেই বারবার রঞ্জিত হয় বাংলার ইতিহাস। এই ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেওয়াই বাঙ্গালীর দুর্ভাগ্যের প্রধান কারন।

জার্মান দার্শনিক হেগেল যথার্থই বলেছিলেন ,”ইতিহাসের বড় শিক্ষা হচ্ছে-ইতিহাস থেকে কেউই শিক্ষা নেয় না”।আমাদের জাতীয় জীবনে সবগুলো বড় বড় অর্জন এবং বিসর্জন থেকে অবশ্যই আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।শিক্ষা না নেওয়ার যে কি পরিণতি আমাদের জাতীয় জীবনে ঘটে যাচ্ছে তা কমবেশি প্রায় সকলেই বুঝতে পারছেন।সম্প্রতি আমাদের দেশে যা কিছু ঘটে যাচ্ছে-সেসবের দিকে নির্মোহভাবে ফিরে তাকালে বা বোঝার চেষ্টা করলে অবশ্যই ধরা পড়বে যে,দেশে কারা কি ঘটাতে চাচ্ছে, কারা আগুন জ্বেলে লঙ্কাকান্ড ঘটাতে চাচ্ছে, কারা নিরীহ শিক্ষার্থীদের অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে দেশে এমন নৃশংস, ধ্বংসযজ্ঞ, হতাহত,অগ্নিসংযোগ,সংঘটিত করার মস্তবড় পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে?

প্রকৃতপক্ষে কোটা সংস্কারের দাবীতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের দাবী ইতিমধ্যেই পুরণ হয়ে গেছে।এতদিন বুদ্ধিজীবি,আইনজীবী,শিক্ষক, সহ সকল পেশাজীবিরাই  বলে আসছিলেন- শিক্ষার্থীদের দাবী যৌক্তিক, এটি পুরণ হওয়া উচিত,-হলেই সকল কিছুর অবসান হবে। কিন্তু আসলেই কি সবকিছুর অবসান হয়েছে? না, হয়নি – কারন “তালগাছটা যে তাদের চাই–ই” —–। আন্দোলনকারীদেরকে শুধু উপসর্গ বানিয়ে যারা আড়ালে তালগাছটি চায়,,তাদের দাবীতো কোটা বাতিল নয়–এরা চায় ক্ষমতা-সেটির জন্য এহেন কোন মিথ্যাচার নেই যা তারা করছে না।এরা হচ্ছে,জামাত,বিএনপি, হ জঙ্গি বাদী কিছু সংগঠন। লক্ষ করুনতো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবী শতভাগ পুরন হওয়ার পড়েও কারা জ্বালাও পুড়াও করে দেশটাকে অস্হিতিশীল করছে? এখন তারাই আবার বলছে কোটা দিয়ে কি হবে-আন্দোলনে নিহতদের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে। আজ আপনারা যারা অভিভাবক হয়ে রাস্তায় নেমেছেন,বিচারালয়ে যাচ্ছেন তারাও কি তাই চাচ্ছেন? ইউনুস সাহেব বিদেশে যেয়ে স্বদেশের নতুন নির্বাচনের জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন, -সেটিও কি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরই অংশ? এবার রাস্তায়,বিদেশ,স্বদেশ যে যেখানে আছেন নির্মোহভাবে ভেবে বলুনতো– পৃথিবীতে এমন নজির কি আছে, যেখানে প্রাণ গেলে প্রাণকে ফিরিয়ে দেওয়া যায়? পৃথিবীতে মাত্র দুটি রক্তপাতহীন আন্দোলনের ইতিহাস ছাড়া বিশ্বের সবগুলো আন্দোলনেই কমবেশি রক্তপাত/প্রাণহানির নজির রয়েছে। সুতরাং  আন্দোলনে হতাহতের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার নজির যেখানে অনুপস্হিত, সেখানে কোটা সংস্কার আন্দোলন কারীদের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে ফের রাস্তায়,আদালতে, শিক্ষাঙ্গনে,ও বর্হিবিশ্বে আজকের কর্মসূচিই আন্দোলন কারীদের বিপথগামীতাকে দৃশ্যমান করলো।

মনে করিয়ে দিতে চাই”১৯৪৭ সালে ধর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি যেমন পাচ বছরের মাথায় ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো তেমনি জামাত/বিএনপিরা কখনো সামরিক শক্তির জোড়ে-কখনো ধর্মের নামে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বাংলার মানুষকে সাময়িক বিভ্রান্ত করলেও ক্ষমতার স্হায়ীত্ব লাভে ব্যর্থ হয়েছে বারবার। আজ দীর্ঘ সময় ধরে দল দুটি ক্ষমতার বাইরে থেকে এরা মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছে সরকার পতনের আন্দোলনে।নানান বেশে সংগঠনগুলোর গণবিরোধী কার্যকলাপ ও উস্কানিমুলক প্রচারণায় আজ দেশটিতে চলছে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকান্ড, যা রাষ্ট,সমাজ ও নাগরিকের জন্য ক্ষতিকর–তাই এই মিথ্যা প্রচার প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে সকলকেই রুখে দাড়াতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *