পাহাড়ি ঢল ও দু’দিনের ভারী বর্ষণে হু হু করে কংস নদের পানি বেড়ে প্লাবিত হয়ে দামপাড়া বেরিবাধ সংলগ্ন এলাকায় বাধের ভিতরে(নদীর তীর এলাকায়) পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। এর ফলে পুর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া,ঝারিয়া, ধলামলগাও ইউনিয়নের মানুষ গত দু’দিন ধরে আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজন রাতদিন বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছে বাধরক্ষায়। তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন।অবশেষে সকল পথপরিক্রমার অবসান ঘটিয়ে ঝারিয়া ইউনিয়নের আনসার কাম্পের পাশে দামপাড়া বেরিবাধটি ভেঙ্গে যায়।
ক্ষতির মুখোমুখি দাড়িয়েও ভূক্তভোগী মানুষগুলো বেরিবাধটির ভাঙ্গনে স্বস্তির নিশ্বাসে দৃশ্যমান হতাশার চাপকে এড়াতে চাচ্ছে। কারন বেরিবাধটি যতটা উপকারে আসছিল তার চাইতেও গত দু’দিনে জনমনে নিজেদের ভিটেবাড়ি রক্ষায় ব্যাতিব্যাস্ত থাকতে হয়েছে। একই সঙ্গে পাহাড় থেকে নেমে আসা বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যার চরম অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে এবং ব্যাপক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় মানুষজন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।
আজ বাধ ভেঙ্গে পানি অন্যপথে প্রবাহিত হয়ে ফসলি জমি নষ্ট হওয়ার ব্যাপক আশংকা থাকলেও পানির চাপ কমবে–এতে অন্ততঃ বাড়িভিটে রক্ষা হবে এটিই মুলতঃ স্বস্তির নিশ্বাস।
এরইসাথে নানামুখী কারনে বাধটি ভাঙ্গার আশংকায় আশু সমাধান চায় সংশ্লিষ্ট এলাকা বাসী।বাধটি অনেক পুর্বে নির্মাণ করা হলেও এর সংস্কার বা মেরামত উল্লেখযোগ্য ভাবে হয়নি। শুধু ২০০৪ সালের বন্যায় বেশ কয়েক জায়গায় ভেঙ্গে গেলে তার সংস্কার করা হয় মাত্র। সে সময়কার বিপদজনক পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়নি। বাধটির উচ্চতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।তাছাড়া বেরিবাধ সংলগ্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত জায়গা খালি(যেখান থেকে মাটি কাটা হয়েছিল) থাকায় একধরনের ভূমিদস্যু তা দখলে নিয়ে নিজস্ব জমির সাথে একত্রিত করে মৎস্যচাষ শুরু করে।সেখানে তারা রাসায়নিক সার ব্যবহার করে এতে সেখানকার মাটি নরম হয়ে যায়।আর সেই নরম মাটিতে চাষকৃত মাছগুলো এক ধরনের সুরঙ্গের সৃষ্টি করে।যা বর্ষা মৌসুমে অতিবর্ষনে বাধের উপরের দিকের মাটি ধ্বসে পড়ে যায়। ফলে বাধের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।এটি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে –পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণ কৃত জায়গা গুলো অবমুক্তকরণ এবং স্পর্শকাতর জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সেখানে সকল প্রকার আবাদ নিষিদ্ধ করে আইনি নোটিশ জারি সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা।
অন্যথায় দামপাড়া বেরিবাধটি রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।
অবশ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনও অতিবৃষ্টির কারণ। উল্লেখিত কারনগুলো সমাধানে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন অতীব জরুরি।
Be First to Comment