কুড়িয়ে পাওয়া ৮০ হাজার টাকা প্রকৃত মালিককে ফেরত দিয়েছে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার হোগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী রাবেয়া আক্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি ) দুপুরে উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের জটিয়াবর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম এর মেয়ে রাবেয়া আক্তার ও সহপাঠী শারমিন আক্তার এবং নাজমা আক্তার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মসজিদের সামনে রাস্তায় ৮০ হাজার টাকা কুড়িয়ে পায়। এরই মধ্যে প্রকৃত মালিক উপজেলার মেঘশিমূল গ্রামের গৃহিণী রাবেয়া বেগম ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণের টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে হারিয়ে ফেলে। হারিয়ে যাওয়া টাকা খোঁজার জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজারকে ফোন করে জানালে ব্যাংকে থাকা আগিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরশাদ ফকির ও ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান ব্যাংক থেকে বেরিয়ে রাস্তায় ছোটাছুটি করতে থাকেন। এ সময় স্কুল যাত্রী রাবেয়া আক্তারের সামনে আসলে রাবেয়া জিজ্ঞেস করে আপনাদের কি কোন কিছু হারানো গেছে? পড়ে তারা জানান তাদের এক সদস্যের নেওয়া ঋণের ৮০ হাজার টাকা হারানো গেছে। তখন স্কুলছাত্রী রাবেয়া আক্তার জানান সে টাকাগুলো মসজিদের সামনে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং হোগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে সেই টাকা ফেরত দেয় ওই ছাত্রী।
টাকার মালিক রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আমি দুপুরে হোগলা ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে টাকা তুলে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে কখন যে পড়ে যায় বুঝতে পারিনি। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকের ম্যানেজার কে ঘটনাটি ফোন করে জানালে কিছুক্ষণ পরে ম্যানেজার জানান এক স্কুল ছাত্রী টাকা পেয়েছে। ওর সততা দেখে অবাক হয়েছি ও চাইলে কাউকে না বলে খরচ করতে পারত।’
স্কুল ছাত্রী রাবেয়া আক্তার বলে, ‘আমার বাবা একজন কৃষক। আমি একজন খেটে খাওয়া কৃষকের সন্তান। সৎ পথে টাকা উপার্জন করা কতটা পরিশ্রমের এবং কষ্টের, পরিবার সেটা আমাকে শিক্ষা দিয়েছে। পরিবারের আদর্শ, শিক্ষকদের উপদেশ অন্যের টাকায় লোভ করতে নেই। তাই কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিয়েছি।
ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি আমার ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকে তিন জন বুদ্ধিমত্তা,আদর্শবান ও সৎ স্কুলছাত্রীকে তাদের এই ভালো কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে ব্র্যাক ব্যাংক থেকে আদর্শবান এই তিন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আরশাদ ফকির বলেন, হারিয়ে যাওয়া টাকা কুড়িয়ে পেয়ে ফেরত দেওয়াতে একটা সততার নজির স্থাপন হলো। এমন সন্তান বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে জন্ম নিলে দেশ আরো বহুদূর এগিয়ে যাবে। ওই ছাত্রীর এমন কাজে অবশ্যই তার পরিবার ও বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাই উচ্ছ্বসিত।’
Be First to Comment