পূর্বধলা সরকারি কলেজের ফল বিপর্যয়ের একজন জিপিএ-৫’ বৃষ্টি

নেত্রকোণার পূর্বধলা সরকারি কলেজে এইচএসসি ২০২৫ সালের পরীক্ষায় চরম ফলাফল বিপর্যয়ের মুখেও আশার আলো দেখিয়েছেন এক কৃতি শিক্ষার্থী। পুরো কলেজের পাশের হার যেখানে মাত্র ৩৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ, সেখানে একমাত্র জিপিএ–৫ (গোল্ডেন/সাধারণ – এই তথ্য অনুপস্থিত, তাই জিপিএ-৫ রাখছি) অর্জন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী মনিরা জান্নাত বৃষ্টি। খারাপ ফলাফলের হতাশাজনক চিত্র যখন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে, ঠিক তখনই বৃষ্টির এই একক সাফল্য এলাকায় বইয়ে এনেছে আনন্দের বার্তা।

​বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রকাশিত ফলাফলে জানা যায়, পূর্বধলা সরকারি কলেজে এবার মোট ৯৮৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, যার মধ্যে মাত্র ৩৭০ জন পাস করেছে। একসময় যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফলাফল ছিল ঈর্ষণীয়, এবার তা তলানিতে ঠেকায় সৃষ্টি হয়েছে হতাশা। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই বৃষ্টি তার মেধা ও অধ্যবসায়ের জোরে জিপিএ–৫ অর্জন করে কলেজের গ্লানি কিছুটা হলেও লাঘব করেছেন।

​ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বৃষ্টি ২০২৩ সালে পূর্বধলা জগৎ মনি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তিনি পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের আন্দা গ্রামের মিজানুর রহমান ও শিউলি আক্তার দম্পতির বড় মেয়ে।

​বৃষ্টির বাবা ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান তার মেয়ের সাফল্যে গর্বিত হয়ে বলেন, ‘আমার তিন মেয়েই মেধাবী। তাদের মধ্যে বৃষ্টি বড়। তার এমন সাফল্যে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’

​নিজের এই সাফল্যের পেছনে বাবা-মায়ের অবদান স্বীকার করে মনিরা জান্নাত বৃষ্টি বলেন, ‘বিশেষ করে আমার মা সব সময় পড়ালেখায় আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। তাদের সহযোগিতাই আমাকে এই ফল এনে দিয়েছে। আমার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া এবং ভবিষ্যতে বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের সেবা করা।’

​পূর্বধলা সরকারি কলেজের সামগ্রিক ফল আশানুরূপ না হলেও, মনিরা জান্নাত বৃষ্টির এই কৃতিত্ব কলেজের শিক্ষক, সহপাঠী ও এলাকাবাসীর মধ্যে তৈরি করেছে এক নতুন গর্ব ও অনুপ্রেরণা। এটি প্রমাণ করে, প্রতিকূলতার মাঝেও ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের জোরে শীর্ষ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *