মোঃ শফিকুল ইসলাম খান : নেত্রকোনার পূর্বধলায় ১১টি ইউনিয়নে বোরো ধান মোট ২১হাজার ৭শত ৮০ হেক্টর জমির মধ্যে ১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায়, বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কৃষকরা। জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছেন কৃষক । ধান গাছের পাতায় ডিম্বাক্রিতির দাগ পড়ে পাতা, কান্ড ও শীষ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেছে। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে ধান গাছের গোড়া পচে শীষ ভেঙে পড়ে এবং ধান গুলোতে চিটা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, বিস্তীর্ন জমির ধান গাছের ৫০ ভাগ থোড় (শীষ) বেরিয়ে যাওয়ার ফলে অধিকাংশ শিষে নেকব্লাস্ট রোগে ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। শীষের নিচের অংশে কালো হয়ে পচে গেছে। সেই সাথে উপরের শীষ শুকিয়ে নীচের শীষ গুলো চিটায় রুপ নিচ্ছে। বিভিন্ন জমি গুলোতে দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে ধান পেকে গেছে। কাছে গিয়ে ধানের শীষে হাত দিয়ে দেখাগেছে, ধানের ছড়া গুলোর মাঝে রয়েছে চিটা।
পূর্বধলা আগিয়া ইউনিয়নের কৈলাটি নয়াপাড়া গ্রামের ভোক্তভুগি কৃষক হাজী আবুল বাশার ও হাটধলা গ্রামের কৃষক আব্দুস ছালাম বলেন, একদিকে ফসল নষ্ট অন্যদিকে খেতে পানি দিতে পারছিনা বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণে, খাদ্যের বড় একটি অংশ আসে বোরো ধান থেকে। গেলো দুবছর আমাদের ২টি বোরো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বড় আশা নিয়ে এবারও ২৮ব্রি ধান আবাদ করেছি। এবারও যদি জমির বোরো ফসল নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে অত্র উপজেলায় খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ধান খেতে অতিরিক্ত ইউরিয়া,ডিএপি বেশি ব্যবহারের ফলে, এমওপি কম দেওয়ায় ও ধান ক্ষেতে পানি না থাকায়, দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও রাতে ঠান্ডা আবহাওয়া এই রোগ দেখা দেয়। ব্লাস্ট রোগ নিয়ন্ত্রনে আমাদের প্রতি ইউনিয়নে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সহ চার সদস্যের মনিটরিং কমিটি এ বিষয়ে লিফলেট বিতরণসহ মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে সেই সাথে ‘সেলটিমা’ নাটিভো, স্ট্রমিন,ট্রুপার,ফাস্ট পটাশ, নামক ঔষধ ব্যবহারের পরামর্শও দিচ্ছি কৃষকদের। ধানক্ষেতে তিন -চার ইঞ্চি পরিমাণ পানি রাখতে হবে। এই উপজেলায় ৭০% পল্লী বিদ্যুৎ এর আওতায়, ৩০% ডিজেল দিয়ে। আমরা বারবার কৃষকদেরকে বলছি (ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯) ধানের চাষ না করতে।
যতটুকু জমি ছত্রাক আক্রান্ত হয়েছে এতে ভয়ের কিছু নাই, আশা করছি রিকোভার করতে পারবো।
পূর্বধলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি’র ডিজিএম গোলাম মুর্তুজা বলেন, আজ সহ গত দুইদিন আমরা লাইনে কাজ করেছি ও অতিরিক্ত গরমে লোডশেটিং দিতে হচ্ছে।
আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।