নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভিতরগাঁও গ্রামে একটি সদ্যোজাত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) আসরের নামাজের আগে প্রসবের পর শিশুটিকে সুপারি বাগানে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে এবং এ ঘটনায় নবজাতকের মা ও প্রসব-সহায়তাকারী ধাত্রীকে আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে আসরের আযানের কিছুক্ষণ আগে দুই নারীকে ভিতরগাঁও এলাকার নতুন বাজারের পূর্ব পাশের একটি সুপারি বাগানের কাছে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। পরদিন শনিবার সকালে স্থানীয় যুবক রাব্বি সুপারি কুড়াতে গিয়ে ঝোপের মধ্যে নবজাতকের মরদেহটি দেখতে পান। পরে তিনি স্থানীয়দের জানালে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ভিড় করে এবং পুলিশে খবর দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল মান্নান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “আসরের আযানের আগে আমি মসজিদে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি দুইজন মহিলা ওই ঝোপের কাছে অবস্থান করছেন। আজ সকালে জানতে পারি সেখানে একটি নবজাতকের মরদেহ পড়ে আছে।”
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, নবজাতকের মা নার্গিস আক্তার (৩৫)। তাঁর স্বামী দীর্ঘ ১০ বছর ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং প্রায় পাঁচ বছর আগে একবার দেশে এসেছিলেন। এই সুযোগে নার্গিসের সঙ্গে তাঁর ফুফাতো শ্বশুরের ছেলে শাহ আলম-এর অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই সম্পর্কের ফলেই এই নবজাতকের জন্ম হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটককৃত ধাত্রী জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, তিনিই নার্গিসের মৃত নবজাতক প্রসব করিয়েছেন। তবে শিশুটিকে ফেলে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন।
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “নবজাতকের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। নবজাতকের মা’কে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য থানায় আনা হয়েছে। প্রসব-সহায়তাকারী ধাত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তদন্তের পর এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”