গ্রামের সকলের সাথে হাসি-খুশি, সুস্থ জীবন যাপন করলেও আদালতের প্রতিবেদনে মো. আ. গফুরকে দেখানো হয়েছে মৃত! অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের বিষমপুর গ্রামে। আ. গফুর একই গ্রামের মৃত. হাছেন আলী মুন্সীর ছেলে।
জানা যায়, বিজ্ঞ পূর্বধলা সহকারী জজ আদালত, নেত্রকোণা ২৭১/২০১৮ নং মামলায় ১নং বিবাদী ছিলেন। আদালতে তিনি জবানবন্দিও দিয়েছেন। কিন্তু মামলার এক পর্যায়ে ১৯/০৬/২০২২ রিপোর্টে প্রকাশ পায় আ. গফুর মৃত্যু বরন করায় মামলা থেকে তার নাম কর্তন করা হলো। বিষয়টি প্রথমদিকে গোপন থাকলেও পরবর্তী সময়ে প্রকাশ পেলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মামলায় জয়ী হওয়ার জন্য জীবিত মানুষকে মৃত দেখানো ঘটনায় হাস্য-রসাত্মকসহ নানা ব্যাঙ্গগল্প তৈরী হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আ. গফুর স্থানীয় বিষমপুর বাজারে আগত লোকজনের সাথে বসে চা পান ও খোশ গল্প করছেন। সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলতে চাইলে প্রথমে তিনি রাজি হননি। পরে তিনি বলেন, মামলায় আমাকে আসামী করা হয়েছিল। আমি কয়েকবার হাজিরা ও জবানবন্দি দিয়েছি। এখন ছেলেরা মামলাটি দেখাশুনা করছে। মৃত্যুর বিষয়টি আমার জানা নেই। এ সময় চায়ের দোকানে বিষমপুর গ্রামের সাহেদ উল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “গফুর আমাদের সাথে বসে চা খাচ্ছে সে মৃত হবে কি করে?”
শফিকুল ইসলাম সবুজ বলেন, “গফুর ভাইয়ের এমন কান্ডে আমরা বিস্মিত হয়েছি। জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে মামলায় জয়ী হওয়ার অপচেষ্টা একটা জঘন্যতম কাজ হয়েছে। যারা বিজ্ঞ আদালতে এমন তথ্য দিয়েছে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হোক।”
ইউপি সদস্য মো. আবুল কাশেম জানান, “মৃত. হাছেন আলী মুন্সীর ছেলে আ. গফুর জীবিত ও সুস্থ আছেন। তিনি আমার এলাকার মুরুব্বি ও ভোটার। আদালতে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া আমাকে লজ্জায় ফেলেছে।”
সাবেক ইউপি সদস্য আ. জব্বার এ বিষয়ে বলেন, “মো. আ. গফুর আমার পরিচিত ও সুস্থ ব্যক্তি। তাকে আমাদের সামাজিক সকল কাজে-কর্মে পাই। শুনেছি একটি মামলায় তাকে মৃত দেখানো হয়েছে এটি প্রতারনা ও আদালতকে বিভ্রান্ত করেছে। এজন্য তাদের শাস্তি পাওয়া উচিত।”
বিশকাকুনী ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম আল আমিন এ বিষয়ে বলেন, “মো. আ. গফুর সুস্থ ও জীবিত একজন মানুষ। আমার জানামতে এ নামে কোন মৃত্যুসনদ প্রদান করিনি।”
Be First to Comment